85 lines
9.3 KiB
Markdown
85 lines
9.3 KiB
Markdown
+++
|
||
title = "স্পর্শ এক ভ্রম"
|
||
date = 2020-12-17
|
||
author = "Palash Bauri"
|
||
tags = []
|
||
+++
|
||
ছুঁয়েও ছুঁতে পারি না কিছু
|
||
|
||
> মনে হয় আছি শুধু পিছু”
|
||
|
||
তুমি এই নিবন্ধটি এখন যে মাধ্যমেই পড়না কেন , পড়ার সময় তুমি নিশ্চয়ই কিছু
|
||
না কিছু স্পর্শ করে আছ , হয় মোবাইল , হয় ল্যাপটপ , কম্পিউটার না হয় অন্য
|
||
কিছু। তুমি শুনলে হয়তো অবাক হবে যে আসলে তুমি এখন কিছুই স্পর্শ করছ না। সবই
|
||
তোমার মস্তিষ্কের ছলনা মাত্র। পদার্থবিজ্ঞান বলে যে , শুধু আমরা নই ,
|
||
যেকোনো দুটি বস্তু পরস্পরকে সত্যিকারের স্পর্শ করতে পারে না।
|
||
|
||
বিশ্বাস হচ্ছে না? চিন্তা নেই আমি তো আছি , সব সহজ করে বোঝাবার ব্যবস্থা
|
||
করে দিচ্ছি –
|
||
|
||
তোমরা হয়তো জানো যে , আমরা প্রত্যহিক জীবনে যা কিছু দেখি, ছুঁই বা অনুভব
|
||
করি সবকিছুই অণু দ্বারা গঠিত। অণু হল যেকোনো বস্তুর ক্ষুদ্রতম একক যাতে ওই
|
||
বস্তুর সকল গুণাগুণ বর্তমান থাকে। বিজ্ঞানের যে শাখায় এসব বিষয়ে আলোচনা করা
|
||
হয় তাকে বলে কোয়ান্টাম বা ক্ষুদ্রাংশিক পদার্থবিজ্ঞান। এই বিজ্ঞানে এমন এমন
|
||
সব আলোচনা ও তথ্য আছে যা তোমার আমার পারিপার্শ্বিক বিশ্বের প্রতি তোমার
|
||
দৃষ্টিভঙ্গিই বদলে দেবে । আজ থাক , অন্য একদিন না হয় আলোচনা করা এই যাবে এই
|
||
কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে।
|
||
|
||
যাদের মাধ্যমিকস্তরের বিজ্ঞান সম্পর্কে একটুও ধারনা তারা নিশ্চয়ই জানবে যে
|
||
পদার্থের ক্ষুদ্রতম একক হচ্ছে অণু আবার এই অণুর মধ্যে রাসায়নিক বন্ধনে
|
||
আবদ্ধ দুই বা তার বেশি তড়িৎ নিরপেক্ষ পরমাণু থাকে। এই পরমাণুর মাঝখানে থাকে
|
||
প্রোটন ও নিউট্রন সম্বলিত নিউক্লিয়াস । এই নিউক্লিয়াসের মধ্যেই পরমাণুর
|
||
সমস্ত ভর অন্তর্নিহিত থাকে , এবং এর চারপাশে নির্দিষ্ট কক্ষপথে নির্দিষ্ট
|
||
সংখ্যক ইলেকট্রন আবর্তন করে। এই ইলেকট্রনগুলি হয় ঋণাত্মক আধানযুক্ত এবং
|
||
নিউক্লিয়াসের প্রোটন হয় ধনাত্মক আধানযুক্ত আর নিউট্রন হয় আধানহীন।
|
||
|
||
যেকোনো কণার একটি সাধারণ ধর্ম হচ্ছে বিপরীত আধানযুক্ত কণাকে আকর্ষণ ও সম
|
||
আধানযুক্ত কণাকে বিকর্ষণ করা। ফলাফল স্বরূপ , ইলেকট্রন অন্য ইলেকট্রনকে
|
||
বিকর্ষণ করে আবার বিপরীত আধানযুক্ত প্রোটনকে আকর্ষণ করে। এর জন্যে দুটি
|
||
ইলেকট্রন কখনই পরস্পরকে স্পর্শ করে না। অর্থাৎ যখন তুমি চেয়ারে বস তখন
|
||
তোমার শরীরের ইলেকট্রনসমূহ চেয়ারের ইলেকট্রনসমূহকে বিকর্ষণ করে। যেহেতু
|
||
আমরা আগেই জেনেছি যে ইলেকট্রন কখনই পরস্পরকে স্পর্শ করে না তাই, তোমার
|
||
শরীরও কখনই চেয়ারকে স্পর্শ করে না ফলে তুমি চেয়ারের উপর ভেসে থাকো, যদিও
|
||
তোমার শরীর ও চেয়ারের পারস্পরিক দূরত্ব এতই নগণ্য হয় যা তা আমাদের বোধগম্য
|
||
হয় না।
|
||
|
||
একটা ছোট্ট হাতে কলমে পরীক্ষার মাধ্যমে ব্যপারটি আরও সহজে বুঝতে পারবে।
|
||
প্রথমে তোমাকে শক্তিশালী দুটি চুম্বক জোগাড় করতে হবে , তবে দণ্ড চুম্বক হলে
|
||
ভালো হয়। বিদ্যালয়ে এরকম চুম্বক থাকতে পারে , সেখানেও তুমি এই পরীক্ষাটি
|
||
করতে পার তা না সম্ভব হলে বাজারে বা অনলাইনে খুব সহজেই এই ধরনের চুম্বক
|
||
পেয়ে যাবে। প্রথমে চুম্বকদুটিকে টেবিলে বা কোন সমতল স্থানে চিত্রের মত করে
|
||
রাখতে হবে।
|
||
|
||
|
||
|
||
যদি তোমার চুম্বক গুলিতে ‘N’ এবং ‘S’ না লেখা থাকে তাহলে পরস্পর
|
||
বিকর্ষণকারী দুটি সম্মুখকে মুখোমুখি রাখলেই হবে। এবার তুমি আস্তে আস্তে
|
||
চুম্বকদুটিকে কাছাকাছি নিয়ে আসতে থাকো। দেখবে যত কাছাকাছি আনবে ততই বিকর্ষণ
|
||
বল আরও শক্তিশালী মনে হবে। যদি চুম্বকদুটি যথেষ্ট শক্তিশালী হয় তবে পুরো
|
||
শরীরের জোর দিয়েও কোনোমতেই দুটো চুম্বককে ছোঁয়াতে পারবে না। চেয়ার ও তোমার
|
||
শরীরও কিছুটা একইভাবে দুটি চুম্বকের মত কাজ করে। এবার হয়তো বুঝতে পারছ যে
|
||
তোমার শরীর ও চেয়ার আসলে কোনভাবেই এক অপরকে স্পর্শ করে না এবং দুটি
|
||
পদার্থের মধ্যবর্তী দূরত্ব নির্ভর করবে দুটি পদার্থের ইলেকট্রনের উপর।
|
||
|
||
|
||
|
||
স্বাভাবিক ভাবেই তোমার এবার কৌতূহল হতেই পারে যে , আমরা আসলে যদি কোনো কিছু
|
||
ছুঁতে পারি না তাহলে আমাদের স্পর্শের অনুভূতি কেন এবং কিভাবে সৃষ্টি হয়। এই
|
||
প্রশ্নের উত্তর নিহিত আছে আমাদের মস্তিষ্ক কিভাবে আমাদের ভৌতবিশ্বকে গ্রহণ
|
||
ও ব্যখ্যা করে। আমাদের ত্বকের স্নায়ুগুলি আমাদের মস্তিষ্কে স্পর্শের বার্তা
|
||
প্রেরণ করে যখনই আমাদের ত্বকের ও অন্য কোনো বস্তুর ইলেকট্রণের মধ্যে পরস্পর
|
||
বিকর্ষণ হয়।
|
||
|
||
এবার হয়তো বুঝতে পারছ যে, স্পর্শ একধরনের মহাবিভ্রম ছাড়া আর কিছুই না।
|
||
স্পর্শ আমাদের মস্তিষ্কের ছলনামাত্র যাতে করে আমাদের চারপাশের পরিবেশকে
|
||
সহজভাবে বুঝতে পারি।
|
||
|
||
------------------------------------------------------------------------
|
||
|
||
তথ্যসূত্রঃ ১।
|
||
|
||
২।
|
||
|
||
বিঃদ্রঃ শুরুর কবিতার লাইনটি তরুণ বাউরির লেখা ( [Tarun
|
||
Bauri](https://www.facebook.com/tarunbauripp/) )
|